OLD AGE HOME

রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশন একটি স্বয়ং শাসিত স্বাধীন সংস্থা, যার সঙ্গে রামকৃষ্ণ মিশন বা রামকৃষ্ণ সারদা মিশন এর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোন যোগাযোগ নেই। স্বামী বিবেকানন্দের-র নামে প্রতিষ্ঠিত এই-আশ্রমে শিবজ্ঞানে জীব – সেবার আদর্শের উপরই বেশী জোর দেওয়া হয়। কিন্তু আর্থিক দিক থেকে এই প্রতিষ্ঠান খুব স্বচ্ছল নয় বলে বয়স্ক লোকদের মধ্যে যারা নিজেদের পয়সায় থাকতে পারবেন না, তাদের জন্য এখনও কোন ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। যারা বিত্তবান এবং বয়স্ক তাদের মধ্যে কেউ যদি এই সমস্যাটি অনুধাবন করে আর্থিক দিক থেকে অসমর্থ ব্যক্তিদের জন্য কিছু দান করেন তাহলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। প্রথমিক পর্যায়ে বাড়ীঘর করার জন্য আমাদের কিছু অর্থসংগ্রহ করতে হবে। প্রস্তাবিত শান্তি আশ্রমের বর্তমান নিয়মাবলী দেওয়া হল ভবিষ্যতে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে থাকেন। কারন এটি হ’ল বয়স্কদের আবাস্থল। বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস নয়। তাছাড়া শান্তি আশ্রমকে তাঁরা নিজেদের বাড়ী মনে করতে পারলেই এখানে থেকে শান্তি বা আনন্দ লাভ করতে পারবেন।

তালপুকুরের বৃদ্ধাবাস তৈরী হয়েছে। এছাড়া বারাসাতের কাছে দত্তপুকুরেও শান্তি-আশ্রম তৈরী হয়েছে। বর্ত্তমানে বারাকপুরে কয়েকটি বাড়ীতে অল্প সংখ্যক বৃদ্ধাবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং মোটামুটিভাবে ঠিক করা হয়েছে যেঃ –

ক) যাঁরা আজীবন এই আশ্রমে থাকবেন তাঁরা গৃহ নির্মাণের জন্য বর্তমানে এক লক্ষ টাকা দেবেন এবং পরে প্রতি মাসে খাওয়া থাকা ইলেক্ট্রিক চার্জ ইত্যাদির জন্য জনপ্রতি 4000 টাকা দেবেন।

খ) ১টি টিউব লাইট, ১টি সিলিং ফ্যান, ১টি নাইট ল্যাম্প এবং বাথরুমে ১টি ল্যাম্প দেওয়া হবে। এর অতিরিক্ত ইলেকট্রিক ব্যবহার করতে হলে আলাদা চার্জ দিতে হবে।

গ) থাকা খাওয়া ইত্যাদির জন্য জনপ্রতি মাসিক যে 4000 টাকা ধার্য হয়েছে তা প্রতি ২ বছর অন্তর শতকরা ৫ (পাঁচ) টাকা হারে বৃদ্ধি পাবে।

 

ঘরের আয়তন ১০’ X ১২’ সঙ্গে ৬’ X ৫’ মাপের একটি Toilet যুক্ত বাথরুম। প্রতি ঘরে ১টা খাট ও গদি থাকবে। যদি স্বামী-স্ত্রী ২ জন থাকেন তাহলে ২টি খাট ও গদি থাকবে। তোষক, চাঁদর, মশারী, বালিশ খাওয়ার থালা, বাটি, গ্লাস ইত্যাদি নিজেকে ব্যবস্থা করতে হবে। বাড়ী থেকে কেউ এলে ঐ ঘরে থাকতে পারেন। সেক্ষেত্রে পৃথকভাবে গেষ্ট চার্জ বাবদ দৈনিক মাথা পিছু 250 টাকা প্রতিদিন দিতে হবে। এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল যারা আজীবন থাকার জন্য এক লক্ষ টাকা দেবেন তাঁদের মধ্যে কেউ যদি কিছু দিন থেকে ১ বছরের মধ্যে বাড়ী ফিরে যান তা’হলে ঐ টাকার অর্দ্ধেক অর্থাৎ 50,000 টাকা ফেরৎ পাবেন। এক বছর অতিক্রান্ত হ’লে টাকা ফেরৎ পাবেন না। কোন সদস্যের/সদস্যার দেহত্যাগের পর ঐ ঘরের উপরে তাঁদের উত্তরাধিকারীর কোন দাবী থাকবে না। ঐ ঘরের মালিক হবে রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশন/বিবেকানন্দ মঠ।

 

শান্তি আশ্রমের দৈনন্দিন কর্মসূচী কী হবে, আহারাদি কিরকম হ’বে এবং অন্যান্য কি কি নিয়মাবলী তৈরী করে তা অনুসরণ করলে আশ্রমবাসী সকলে প্রকৃত শান্তিময় জীবনযাপন করতে পারবেন তা শান্তি আশ্রমের ভারপ্রাপ্ত কর্মী সকল আবাসিকদের সঙ্গে আলোচনা করে একটা খসড়া তৈরী করে দেবেন মিশন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের জন্য। মিশন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনবোধে ঐ নিয়মাবলী পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করে যা অনুমোদন করে দেবেন সেভাবেই শান্তি আশ্রম পরিচালিত হ’বে।

 

এই বিষয়ে কেউ যদি আরও বিশদ কিছু জানতে চান তাহলে, কর্মসচিব, রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশন, ৭, রিভারসাইড রোড, বারাকপুর, ২৪ পরগণা (উঃ) এই ঠিকানায় চিঠি লিখতে পারেন অথবা যে কোনদিন বেলা ১১/১২টা নাগাদ এসে দেখা করে সাক্ষাতে সব জেনে নিতে পারেন। বারাকপুরে এবং তালপুকুরে এই শান্তি আশ্রম ব্যতীত বাঁকুড়ার জয়রামবাটি গ্রামে, পুরুলিয়ার বেলকুড়ি গ্রামে, বিহারের মধুপুরে ও দেওঘরে এবং বেনারসে হরিশচন্দ্র ঘাটের কাছে শিবালাতে বৃদ্ধ/বৃদ্ধাদের থাকার ব্যবস্থা আছে। কলকাতায় শোভাবাজার নিবাসী শ্রীযুক্ত রামানন্দ সাহা ও শ্রীযুক্ত শ্যামানন্দ সাহা দেওঘরে অবস্থিত তাঁদের পৈতৃক ভিটা দান করেছেন ওখানে অন্যান্য সমাজ-কল্যাণমূলক কাজের সঙ্গে বৃদ্ধ/বৃদ্ধাদের একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠার জন্য। যাঁরা এইসব তীর্থক্ষেত্রে বসবাস করতে চান তাঁরা চিঠির মাধ্যমে বা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। ফোনে যোগাযোগ করা যেতে পারে, সপ্তাহে ছুটির দিন বাদে, যে কোন দিন বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৪টার মধ্যে ২৫৯২-০৫৪৭ এই নম্বরে ।

আমাদের এ পরিকল্পনা যাতে সার্থক হয় তার জন্য শ্রীরামকৃষ্ণ আশীর্বাদ প্রার্থনা করি।

 

 

                                                                                                                                                                  ইতি নিবেদক –

                                                                                                                                                               স্বামী নিত্যরূপানন্দ

                                                                                                                                                                      কর্মসচিব